নিজস্ব প্রতিবেদক::
উখিয়ায় রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। সরকারি কলেজে চাকরিতে বহাল থেকে নির্বাচনে প্রার্থীতার জন্য মনোনয়ন ফরম জমা ও মনোনয়ন বৈধতা পেয়েছেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী। মনোনয়ন যাচাই বাছাইকালে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে হতাশ হয়েছেন অপরাপর প্রার্থীরা।
তফসিল অনুযায়ী শুক্রবার (৫ জুলাই) মনোনয়ন যাচাই-বাছাই এর শেষ দিন। ওই দিন মনোনয়নপত্র যাছাই বাছাই কালে চরম আপত্তি তুলেন উপস্থিত প্রার্থীরা।
নির্বাচন অফিস সূত্রে, ৫ জন প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই শেষে সকলকে বৈধ প্রার্থী হিসাবে তালিকা প্রকাশ করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচন-২০২৪ এর রিটানিং অফিসার মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
বৈধ প্রার্থীরা হলেন, হুমায়ুন কবির চৌধুরী, সাদমান জামী চৌধুরী, মোঃ ফরিদুল আলম মকবুল হোসাইন মিথুন ও আব্দুল মালেক চৌধুরী। এবারের নির্বাচনে দলীয় কোন প্রতীক না থাকায় সবাইকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে।
রিটার্ণিং অফিসার ৫ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধতা দিলেও হুমায়ুন কবির চৌধুরীর মনোনয়ন বৈধতা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন অপর প্রার্থী সাদমান জামীর ব্যক্তিগত আইনজীবী ব্যারিষ্টার সাফফাত ফারদিন রামিম।
তিনি জানান, সরকারি গেজেটভুক্ত হয়ে চাকরিতে নিযুক্ত থাকার পর নির্বাচনে প্রতিদ্বিতা করতে পারে না। সরকারি বিধিতে পদত্যাগ করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিধান রয়েছে। সেটি অনুসরণ না করেই অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী মন্টু নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সরকারি গেজেট ভুক্ত কর্মকর্তা বা অধ্যাপক কে পদত্যাগ পত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ ও গৃহীত না করলে তা কার্যকর হবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গত ১৬-০৪-২০২৩ ইং তারিখে বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ শাখা বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকার উপসচিব তানজিলা খানম স্বাক্ষরিত স্মারক নং-৩৭,০০,০০০০,০৮৫,১৫,১৩৪ (এ) ২২-১২০৫ নং মূলে প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলাধীন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ সরকারিকরণ করা হয়।
উক্ত সরকারি কলেজে প্রভাষক হলেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী। উক্ত প্রজ্ঞাপনে সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা বিধি-৫ এবং বিধি-৬ এ বর্নিত বিধান মোতাবেক সরকারি করণের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৮ হতে অধ্যাপক রাজস্ব খাতে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার সাফফাত ফারদিন রামিম আরও বলেছেন, অনুরূপ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তার পদত্যাগপত্র কার্যকর না করে সরকারি চাকরিতে বহাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার আইন-২০০৯ এর ২৬ (ঙ) ধারা অযোগ্য হওয়ার পরেও তাকে বৈধ প্রার্থী হিসাবে তালিকা প্রকাশ করা আইনসিদ্ধ হয়নি।
চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী’র আইনজীবী এডভোকেট দুলাল মল্লিক জানান, যথাযথ নিয়ম মেনে কলেজ অধ্যক্ষকে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
প্রার্থী সাদমান জামী সাংবাদিকদের জানান, সরকারি গেজেটভুক্ত সরকারি কলেজের অধ্যাপনা করে অধ্যাপক হুমায়ুন কবির মন্টু কে প্রার্থিতা বৈধতা নিয়ে আমরা অবাক হয়েছি। আমরা আপত্তি তোলার পরও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তা এড়িয়ে যায়। অপর প্রার্থী ফরিদুল আলম অনুরূপভাবে তার বিষয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় পদত্যাগ না করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া কতটুকু বৈধতা পায় তা ভাবিয়ে তুলেছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচন-২০২৪ এর রিটানিং অফিসার মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেছেন, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরীর প্রার্থীতা বিষয়ে অভিযোগ থাকলে আগামী তিন দিনের মধ্যে জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবরে আপীল করার সুযোগ রয়েছে।
পাঠকের মতামত